বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগে - বিস্তারিত জানুন
বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগে, কিভাবে বাহরাইন যেতে হয়, বাহরাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি, কিভাবে আবেদন করতে হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো যদি আপনি না জেনে থাকেন। তাহলে এই পোস্টটি পড়তে পারেন।
বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগে এবং কিভাবে যাবেন এই সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য নিয়ে আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বাহরাইন উন্নত দেশগুলোর মধ্যে পরিচ্ছন্ন একটি রাষ্ট্র। বাহরাইনে অনেক ধরনের কাজের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আজকের পোস্ট পড়ে যা যা জানতে পারবেন
বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগে
বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগে জেনে নিন। বর্তমানে প্রায় অনেক দেশ থেকে বাহরাইনে কাজের জন্য যেয়ে থাকে। অনেকেই জানেন না, বাহরাইন যেতে কত টাকা খরচ হয়। বাহরাইন যাওয়ার জন্য কেমন খরচ, কিভাবে যাবেন এ সকল বিষয়ে অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন। সাধারণত বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগবে, সেটি নির্ভর করবে কাজের ক্যাটাগরির উপর। বাংলাদেশ থেকে বাহরাইন যেতে অনেক ধরনের ভিসা পাওয়া যায়। আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় বাহারাইন যেতে চান, তাহলে আপনার প্রায় ৪ থেকে ৬ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তবে সময়ের ব্যবধানে টাকার পরিমাণটা বাড়তেও পারে।
আপনারা চাইলে বিভিন্ন মাধ্যমে বাহরাইন যেতে পারবেন। আপনি কোন এজেন্সির
মাধ্যমে বাহরাইন যাচ্ছেন, সেটির উপরেও টাকার পরিমাণটা নির্ভর করবে। আপনি যেটি
এজেন্সির সাথে চুক্তি করে নিবেন, সেটি পুরোটাই দেওয়া লাগবে। এজেন্সি
পেতে কম বেশিও হয়ে থাকে। কোনো এজেন্সি প্রায় ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা নিয়ে
থাকে। আবার কোনো এজেন্সি যদি আপনার চেনা পরিচিত হয় বা আত্মীয় যদি
হয়, তাহলে কিছুটা কম টাকা নিতে পারে। এছাড়াও আপনি যদি আপনার কোনো প্রবাসী
আত্মীয়-স্বজন দ্বারা যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ অনেকটাই কম হবে।
বাহরাইন যেতে কত বছর বয়স লাগে
মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে অন্যতম ধনী দেশ হচ্ছে বাহরাইন। বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ
বাহরাইনে কাজের জন্য যেয়ে থাকেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তাদের নিজ
নিজ দেশের নিয়ম অনুযায়ী বয়স সীমা পরিবর্তন করার ক্ষমতা
রাখে। সাধারণত বাহরাইনের ভিসার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২০ বছর হতে হয়।
বাংলাদেশ থেকে অথবা যেকোনো দেশ থেকে বাহরাইনে আসতে হলে, ন্যূনতম ২০ বছর
হতে হবে।
২০ বছরের কম হলে বাহরাইনের ভিসার জন্য জারি করা যাবে না। আপনার পাসপোর্টে বিশ বছর
হতে হবে। আপনি যদি অন্যান্য ক্ষেত্রে যেতে চান, তবে
আপনার বাবা-মায়ের পারমিশন নিয়ে টুরিস্ট ভিসায় যেতে
পারবেন। কিন্তু আপনি যদি কাজের ভিসায় যেতে চান, তাহলে আপনার বয়স ২০
বছর হতে হবে। তারপর ২০ বছর হলে আপনি বাহরাইনে কাজের জন্য যেতে পারবেন এবং
ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বাহরাইন যেতে কি কি কাগজপত্র লাগবে
আপনার অনেকে বাহরাইন যেতে চান, কিন্তু কি কি কাগজ পত্র লাগবে সেই
বিষয়ে অনেকেই জানেন না। বাহরাইন যেতে হলে কি কি কাগজপত্র লাগবে সেই বিষয়
নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। চলুন এবার বিস্তারিত আলোচনা করা যাক-
- আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট লাগবে। কমপক্ষে পাসপোর্ট এর মেয়াদ ছয় মাস হতে হবে।
- আপনার একটি পাসপোর্ট সাইজের সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ছবি জমা দিতে হবে।
- আপনার মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট থাকতে হবে।
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং জন্ম নিবন্ধনের কপি থাকতে হবে।
- আপনার সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট রাখতে হবে।
- সমস্ত ডকুমেন্ট ভালোভাবে বুঝে শুনে নিয়ে নিতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় আপনার ডকুমেন্টগুলো দেখাতে হবে।
বাহরাইন যেতে উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো লাগবে। এছাড়াও যদি অতিরিক্ত কোনো
কাগজপত্র লাগে তাহলে যে এজেন্সির মাধ্যমে যাচ্ছেন, তারা আপনাকে জানিয়ে
দিবে। আপনাকে সব নিয়ম নীতি মেনে, ভালোভাবে বুঝে শুনে যেতে হবে। আশা
করছি বুঝতে পেরেছেন।
বাহরাইনে কোন কাজের চাহিদা বেশি
যদি বাহরাইনে কাজের জন্য যেতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে,
বাহরাইনে কোন কাজ গুলো চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বাহরাইনে বিভিন্ন ধরনের
কাজের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তবে, অন্যান্য দেশগুলোর মতো
বাহরাইনেও কাজের ভিসার খরচ এবং অন্যান্য খরচ গুলো বেড়ে গেছে। আপনারা
যারা বাহরাইন যেতে চাচ্ছেন, তারা অবশ্যই খরচের বিষয়গুলো
ভালোভাবে বুঝে নিয়ে তারপরে বাহরাইন যাবেন। বাহরাইন যেতে হলে
আপনাকে এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা নিতে হবে আবার আপনি চাইলে সরাসরি কাজের জন্য
আবেদন করতে পারেন।
সরাসরি ভিসার খরচ এজেন্সির তুলনায় কম হলেও অনেক ক্ষেত্রে তা ঝামেলা বা
ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। সেজন্য আপনি বাহরাইন যেতে চাইলে, অবশ্যই ভালোভাবে তথ্য
যাচাই-বাছাই করে এবং সঠিকভাবে আবেদন করে তারপরে যাবেন। বাহরাইনে বেশ
কয়েক ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে। যেমন-
- কনস্ট্রাকশন
- ইলেকট্রিশিয়ান
- মেকানিক্যাল কাজ
- ড্রাইভার
- রোড ক্লিনার
- গ্লাস ক্লিনার
- শিল্প মজুরের কাজ
- কৃষি কাজ
- বাড়ি এবং অফিসের কাজ
- হোটেল ম্যানেজমেন্ট/রুম সার্ভিস এর কাজ
বাহরাইনে মূলত এই সমস্ত কাজগুলো চাহিদা একটু বেশি হয়ে থাকে। যদি কোনো নির্দিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকে আপনি যদি কোনো কাজের উপর দক্ষতা সম্পন্ন হয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে ভালো পরিমাণে বেতন পেতে পারেন। আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে আপনার বেতন আরো বেশি হতে পারে। বাহরাইনে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাটা ভালোভাবে তৈরি করে নিবেন। এতে করে কাজ পেতে আপনার অনেক সুবিধা হবে।
বাহরাইনে কোন কাজে কেমন বেতন
বাহরাইনে বেশ কয়েক ধরনের কাজের কাজের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। বেতনটা নির্ভর
করে সাধারণত কাজের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর। যারা নির্দিষ্ট কোনো
কাজের উপর দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন তাদের কাজ পেতে খুব বেশি সময় লাগে
না।তবে সাধারণ কাজ গুলোর বেতন তুলনামূলকভাবে। চলুন এবার আলোচনা করা
যাক কোন কাজের বেতন কেমন।
- ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক্যাল এবং ড্রাইভিং এর কাজ। এই সমস্ত কাজগুলোর চাহিদা একটু বেশি থাকে। আপনি যদি এই কাজগুলোর উপর ভালো দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা রাখেন, সে ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ৮০০ থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত পেতে পারেন। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার সমান।
- হোটেল ক্লিনার এর কাজ, গ্লাস ক্লিনার এর কাজ এবং রোড ক্লিনার এর কাজ। এই সমস্ত কাজগুলো মিডিয়াম বেতনের হয়ে থাকে। আপনি যদি ভালোভাবে কাজগুলো করতে পারেন, তাহলে প্রতি মাসে ২৫০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত পেতে পারেন। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
- শপিং মলের কাজ, সিক্রেট কাজ, বাসা বাড়ির কাজ এবং কৃষি কাজ। এই সমস্ত কাজগুলো সাধারণ বেতনের হয়ে থাকে। আপনি যদি কাজগুলো ভালোভাবে করতে পারেন তবে প্রতি মাসে ১৫০ থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত পেতে পারেন। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২০ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। আপনি চাইলে ওভারটাইম কাজ করে বেতন বেশিও পেতে পারেন।
সাধারণত বাহরাইনে ভালো কাজ পেতে হলে, আপনাকে অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা সম্পন্ন
হতে হবে। যারা অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা সম্পন্ন তাদের জন্য বাহরাইনে ভালো ভালো
কাজের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তবে আপনি যে কাজের জন্য যেতে চান না
কেন, তার আগে অবশ্যই আপনাকে ভালোভাবে ভিসার খরচ এবং বাহরাইনে যাওয়ার খরচ সব
সম্পর্কে জেনে বুঝে তারপরে যেতে হবে। দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে সঠিক কাজ
বেছে নিতে পারলে, বাহরাইনে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
বাহরাইনের এক দিনার সমান বাংলাদেশী কত টাকা
বাংলাদেশ থেকে প্রায় প্রত্যেক বছর অনেক মানুষ বাহরাইনের মতো দেশে প্রবাসী হয়ে রয়েছেন কাজের জন্য। এই জন্য অনেক বাংলাদেশের প্রবাসীরা বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে এবং গুগলের মাধ্যমে বাহরাইনের এক দিনার সমান বাংলাদেশের কত টাকা এই সম্পর্কে জানতে চেয়ে থাকেন। সাধারণত টাকার মান নির্ভর করে ওই দেশে অর্থনৈতিক অবকাঠামোর উপর। আবার এক্সচেঞ্জ রেট নির্ভর করে উভয় দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর উপর এবং আপনার নিজস্ব চয়ন করা রেমিটেন্স প্রেরণকারী সংস্থার উপর।
অনেকেই বাহরাইনের এক দিনার সমান কত বাংলাদেশী টাকা এ সম্পর্কে
জানতে চেয়ে থাকেন। তবে, প্রায় প্রতিনিয়তই
টাকার রেট উঠা-নামা করে। তারপরেও বর্তমানে বাহরাইনের এক
দিনার সমান বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩২২ টাকা ৩২৩ টাকার সমান। তবে
সময়ের পরিবর্তে এটা বাড়তেও পারে কমতেও পারে।
বাংলাদেশ থেকে বাহরাইন যেতে বিমান ভাড়া কত লাগে
বাংলাদেশ থেকে বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগে, সেই সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে
বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। সাধারণত বাহরাইন যেতে হলে আকাশ পথে যেতে
হয়, আর আকাশ পথে যেতে হলে খরচটা একটু বেশি হবে। বাংলাদেশ
থেকে বাহরাইন যেতে হলে কোন ফ্লাইটের ভাড়া কি রকম চলুন
এবার সেটি আলোচনা করা যাক-
- আপনি যদি সালাম এয়ার- এ যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়তে পারে প্রায় ১৬,৯৯৫ টাকা।
- আপনি যদি ইন্ডিগো এয়ার- এ যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়তে পারে প্রায় ১৭,৭৯৬ টাকা।
- আপনি যদি এয়ার এরাবিয়া- তে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আপনি খরচ পড়তে পারে প্রায় ১৭,৯৫৪ টাকা।
- আপনি যদি ওমান এয়ার- এ যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়তে পারে প্রায় ১৮,৮২৭ টাকা।
- আপনি যদি এমিরটেস এয়ারলাইন্সে যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়তে পারে প্রায় ২০,৫৪৫ টাকা।
- আপনি যদি কাতার এয়ার ওয়েজে যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়তে পারে প্রায় ২৩,২১৫ টাকা।
- আপনি যদি ফ্লাই দুবাই এয়ার- এ যেতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়তে পারে প্রায় ৩০,৩৯১ টাকা।
বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগে-শেষ কথা
বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয় আজকের পোস্টের বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি পোস্টটি ভালোভাবে পড়ে থাকেন তাহলে, আশা করছি সমস্ত বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন। বর্তমানে প্রায় অনেক দেশ থেকে বাহরাইনে কাজের জন্য যেয়ে থাকে। অনেকেই জানেন না, বাহরাইন যেতে কত টাকা খরচ হয়। বাহরাইন যাওয়ার জন্য কেমন খরচ, কিভাবে যাবেন এ সকল বিষয়ে অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন। সাধারণত বাহরাইন যেতে কত টাকা লাগবে, সেটি নির্ভর করবে কাজের ক্যাটাগরির উপর।
বাংলাদেশ থেকে বাহরাইন যেতে অনেক ধরনের ভিসা পাওয়া যায়। আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে বাহারাইন যেতে চান, তাহলে আপনার প্রায় ৪ থেকে ৬ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তবে সময়ের ব্যবধানে টাকার পরিমাণটা বাড়তেও পারে। আপনারা চাইলে বিভিন্ন মাধ্যমে বাহরাইন যেতে পারবেন। আপনি কোন এজেন্সির মাধ্যমে বাহরাইন যাচ্ছেন, সেটির উপরেও টাকার পরিমাণটা নির্ভর করবে। আপনি যেটি এজেন্সির সাথে চুক্তি করে নিবেন, সেটি পুরোটাই দেওয়া লাগবে। এজেন্সি পেতে কম বেশিও হয়ে থাকে। কোনো এজেন্সি প্রায় ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা নিয়ে থাকে।
আপনি দুর্দান্ত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url