লাইলাতুল কদর কত তারিখে বিস্তারিত জানুন

লাইলাতুল কদর কত তারিখে এ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের মতামত রয়েছে। অনেকেই সঠিকভাবে জানেন না, কত রমজান এবং কত তারিখে লাইলাতুল কদর হয়। এই পোস্টে লাইলাতুল কদর কত তারিখে, তা সঠিক ভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। 

লাইলাতুল-কদর-কত-তারিখে

লাইলাতুল কদরের বিষয়টি নিয়ে ৪০টির অধিক মতামত রয়েছে। অনেকে মনে করে, ২৭শে রমজানে লাইলাতুল কদর হবে।তবে কোরআন এবং হাদিসের আলোকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মত হলো- রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর যে কোনো একটি রাতে অর্থাৎ- ২১, ২৩, ২৫,  ২৭ এবং ২৯ তম রাতে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ লাইলাতুল কদর কত তারিখে

লাইলাতুল কদর কত তারিখে

লাইলাতুল কদর কত তারিখে এই বিষয়টি সঠিকভাবে জানা অত্যন্ত জরুরি। কেননা, লাইলাতুল কদরের রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন- "নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি কদরের রজনীতে"। আর এই লাইলাতুল কদরের রাত হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। লাইলাতুল কদরের রাতে ফেরেশতাগণ সমভিব্যাহার অবতরণ করেন। এবং মহান আল্লাহর নির্দেশে - সব বিষয়ে শান্তির বার্তা পৌঁছে দেন। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত।

লাইলাতুল কদরের রাত কেন হাজার রাতের থেকে উত্তম। তা শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালায় ভালো জানেন। কোরআন ও হাদিসে নির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি রমজানের কোন রাতটিতে লাইলাতুল কদরের রাত হবে। তবে সম্পর্কে বেশ কিছু নিদর্শন দেওয়া হয়েছে।হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)  রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করতে বলেছেন। অর্থাৎ - ২১, ২৩, ২৫, ২৭ এবং ২৯ এই রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর তালাশ করতে হবে।

লাইলাতুল কদর হয়তো কোনো বছর ২১শে রমজানের রাতে আসতে পারে। আবার আরেক বছর ২৩শে রমজানের রাতে আসতে পারে। আবার কোনো বছরে ২৫, ২৭ অথবা ২৯ শে রমজানের রাতে আসতে পারে। লাইলাতুল কদর একই বছরেও অঞ্চল ভিত্তিক ব্যক্তি ভিত্তিক একাধিক রাতে লাইলাতুল কদর হতে পারে। আবার বাংলাদেশে ২১শে রমজানের রাতে আসতে পারে।সৌদি আরবে ২৯ শে রমজানের রাতে আসতে পারে। কবে, কোন সময় এবং কত রমজানে লাইলাতুল কদর রাত আসবে তা শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালায় জানেন।

লাইলাতুল কদর এর মাসায়ালা 

সুনির্দিষ্ট ভাবে ২৭শে রমজানে লাইলাতুল কদর এমন কোনো তথ্য প্রমাণ নেই। তবে ২৭শে রমজানের রাতে লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এটা শুধুমাত্র সম্ভবনা, সুনিশ্চিত হিসেবে ২৭ শে রমজানের রাত লাইলাতুল কদরের রাত হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাদিসে একাধিকবার বলেছেন- "তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান করো"। 

লাইলাতুল-কদর-কত-তারিখে

লাইলাতুল কদর রাত কবে, কোনো সময় আসবে এবং কত রমজানে আসবে তা নির্দিষ্ট নয়। তবে কোরআন এবং হাদিসে বলা হয়েছে- রমজান মাসের শেষ দশকের যেকোনো বেজোড় রাতের কোনো এক রাতে লাইলাতুল কদর আসবে। তাই নির্দিষ্টভাবে ২৭শে রমজানের রাতে লাইলাতুল কদরের আশা করে থাকলে হবে না। রমজান মাসের শেষ দশকের বেজোড় রাত গুলোতে লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান করতে হবে।

লাইলাতুল কদর রাতের ইবাদত

লাইলাতুল কদর রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া উচিত। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরের রাতে ইমাম এবং ইহতিসাবের সঙ্গে নামাজে দাঁড়ায় তার আগের সমস্ত পাপ মাফ করে দেওয়া হয়। তাই লাইলাতুল কদর রাতে আমাদের বেশি বেশি নফল নামাজ পড়তে হবে। এবং শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে এই আমল করতে হবে। কেননা, সঠিকভাবে কোন রাতে লাইলাতুল কদর আসবে আসবে তা বলা হয়নি।

লাইলাতুল-কদর-কত-তারিখে

লাইলাতুল কদর রাতে- নফল নামাজ আদায় করা যায়, কুরআন তেলাওয়াত করা, কবর জিয়ারত করা, তওবা-ইস্তেগফার করা, জিকির-আজকার করা, আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা এবং গরিবদের খাবার দান করা ইত্যাদি। এই সমস্ত ইবাদত গুলো বেশি বেশি করা দরকার। কেননা- এই রাত বছরে একবারই আসে যা হাজার বছরের রাতের সমান। আর এই লাইলাতুল কদরে আল্লাহ  তায়ালা কোরআন নাযিল করেছিলেন।

লাইলাতুল কদরের গুরুত্বপূর্ণ দোয়া

  • "আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি"
  • অর্থঃ হে আল্লাহ; আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, অথবা আমাকে ক্ষমা করে দিন।
  • "রাব্বানাকশিপ আন্নাল আযাবা ইন্না মুমিনুন"
  • অর্থঃ হে আমার পালনকর্তা; আমাদের উপর থেকে আপনার শাস্তি প্রত্যাহার করুন, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি আপনার উপর।
  • "রব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমীন"
  • অর্থঃ হে আমার রব; আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার উপর রহম করুন, আপনি তো সর্বশেষ রহমকারী।
  • "রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়া ক্বিনা আজাবান নার"
  • অর্থঃ হে আমার রব; আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান করে আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করিয়েন।
  • " রাব্বানা ফাগফিরলানা ওয়া জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সায়্যিয়াতিনা ওয়া  তাওয়াফফানা মাআল আবরার"
  • অর্থঃ হে আমার প্রভু; আমাদের গুনাহ ক্ষমা করুন, আমাদের ভুলগুলো ক্ষমা করুন এবং সৎকর্মশীল লোকদের সাথে পরিণতি দান করুন। 
  • "রাব্বি বিমা আনআমতা আলাইয়্যা ফালান আকুনা জ্বাহিরাল লিল্মুঝরিমিন" 
  • অর্থঃ হে আমার পালনকর্তা; আপনি আমার উপর অনুগ্রহ করেছেন, এরপর আমি কখনো অপরাধীদের সাহায্যকারী হব না।
  • "রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা"
  • অর্থঃ হে আমার রব; তাদের উভয়ের প্রতি রহম করুন, যেমনভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।
  • "আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা ওয়াত্তুক্বা  ওয়াল আফাফা ওয়াল গিনা"
  • অর্থঃ হে আমার রব; আমি আপনার কাছে হেদায়েত কামনা করি এবং আপনার ভয় তথা পরহেজগার কামনা করি এবং আপনার কাছে সুস্থতা এবং পবিত্রতা কামনা করি এবং সম্পদ সামর্থ্য কামনা করি।

লাইলাতুল কদর কত তারিখে - শেষ কথা

লাইলাতুল কদর কত তারিখে এ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের মতামত রয়েছে। অনেকেই সঠিকভাবে জানেন না, কত রমজান এবং কত তারিখে লাইলাতুল কদর হয়। লাইলাতুল কদরের বিষয়টি নিয়ে ৪০টির অধিক মতামত রয়েছে।অনেকে মনে করে, ২৭শে রমজানে লাইলাতুল কদর হবে। তবে কোরআন এবং হাদিসের আলোকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মত হলো- রমজানের শেষ দশকের বেতর রাতগুলোর যে কোনো একটি রাতে অর্থাৎ- ২১, ২৩, ২৫,  ২৭ এবং ২৯ তম রাতে।

সুনির্দিষ্ট ভাবে ২৭শে রমজানে লাইলাতুল কদর এমন কোনো তথ্য প্রমাণ নেই। তবে ২৭শে রমজানের রাতে লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এটা শুধুমাত্র সম্ভবনা, সুনিশ্চিত হিসেবে ২৭ শে রমজানের রাত লাইলাতুল কদরের রাত হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাদিসে একাধিকবার বলেছেন- "তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান করো"। 

লাইলাতুল কদর রাতে- নফল নামাজ আদায় করা যায়, কুরআন তেলাওয়াত করা, কবর জিয়ারত করা, তওবা-ইস্তেগফার করা, জিকির-আজকার করা, আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা এবং গরিবদের খাবার দান করা ইত্যাদি। এই সমস্ত ইবাদত গুলো বেশি বেশি করা দরকার। কেননা- এই রাত বছরে একবারই আসে যা হাজার বছরের রাতের সমান। আর এই লাইলাতুল কদরে আল্লাহ  তায়ালা কোরআন নাযিল করেছিলেন।

লাইলাতুল কদর রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া উচিত। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরের রাতে ইমাম এবং ইহতিসাবের সঙ্গে নামাজে দাঁড়ায় তার আগের সমস্ত পাপ মাফ করে দেওয়া হয়। তাই লাইলাতুল কদর রাতে আমাদের বেশি বেশি নফল নামাজ পড়তে হবে। এবং শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে এই আমল করতে হবে। কেননা, সঠিকভাবে কোন রাতে লাইলাতুল কদর আসবে আসবে তা বলা হয়নি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি দুর্দান্ত আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url